কলাপাড়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের নিখোঁজ হওয়া ৭ জেলে পরিবারের মানবেতার জীবন | আপন নিউজ

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়ায় কলেজ ছাত্রী’র ঝু’ল’ন্ত লা’শ উ’দ্ধা’র কলাপাড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ১০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিল ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস বুলেটিনের ব্যাখ্য প্রচার সেক্টরভিত্তিক আগাম কার্যক্রমের ওপর কর্মশালা কলাপাড়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী’র মতবিনিময় সভা কলাপাড়ায় অর্ধ কোটি টাকা লোপাটের পর এবার ইউসিসি’র পকেট কমিটি গঠন! তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, দুই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গণ’ধ-র্ষ’ণ মামলা আমতলীতে পুষ্টিসম্মৃদ্ধ মিষ্টি আলুর জাত সম্প্রসারণে কৃষক মাঠ দিবস কলাপাড়া উপজেলা পর্যায়ে সার্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা কলাপাড়ায় গ্রামীণ জনপদের ৮৮ কিলোমিটার পাকা সড়কের বেহাল দশা আমতলীতে বজ্রপাতে হাফেজ ছাত্রের মৃ-ত্যু
কলাপাড়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের নিখোঁজ হওয়া ৭ জেলে পরিবারের মানবেতার জীবন

কলাপাড়ায় ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের নিখোঁজ হওয়া ৭ জেলে পরিবারের মানবেতার জীবন

এনামুল হক, কলাপাড়া অফিসঃ 

কলাপাড়ার রামনাবাদ ও বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিন ইলিশ মাছ শিকারে সরকারী নিষেধাজ্ঞা জারির শেষ বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা বাজার সংলগ্ন জেলে পল্লীতে গিয়ে কথা হয় জেলে আলমগীর হাওলাদারের সাথে। ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকার সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারনে ২০ হাজার জেলে বেকার অবস্থায় না খেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করেছেন। অনেকই সরকারী বরাদ্দের চাল পায়নি। অবরোধ শেষহবার পথে।
পেটের ক্ষুধায় তাড়নায় মাঝে মধ্যে অবরোধ উপেক্ষা করে কিছু কিছু জেলে সাগরে ইলিশ শিকারে গিয়ে জরিমানা গুনতে হয়েছে। ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে এক/ দুই হালির বেশী মাছ ধরা পড়ছে না। আবার কখনো খালি মাছে ফিরতে হয়। এতে করে ডিজেল খরচই হচ্ছে না। একএকটা জেলে নৌকায় ১৪/১৫ জন মাঝীমাল্লা তাতে তাদের পোষায় না। এতে মাঝীমাল্লারা হতাশ হয়ে পড়েছে। অনেকেই মহাজনের নিকট থকে ধারদেনা করে সাবার নিয়ে বুকভরা আশায় সাগরে নামছেন। জানা গেছ, আষাঢ়, শ্রাবন, ভাদ্র তিন মাস ইলিশ মৌসুম। কথাগুলো আক্ষেপ করে বললেন বঙ্গোপসাগর পাড়ের বুড়িজালিয়া মহিপুর, কুয়াকাটা জেলে আঃ করম মাঝী। গত বছর আষাঢ় মাসে প্রতিটি নৌকা ভরে জেলেরা ইলিশ মাছ নিয়ে তীরে আসছে। এতে মাঝীমাল্লাসহ মহাজনের খরচাদী দিয়ে ১০/১২ হাজার টাকা নিয়ে জেলেরা বাড়ী ফিরেছেন। গভীর সমুদ্রে রইলধরা পড়লেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানেযেতে পারছে না জেলেরা। গত বছর ইলিশমৌসুমে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ৪ জন জেলের জীবন দিতে হয়েছে। মায়ের দোয়াসহ চারটি নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছিল। উদ্ধার হয়েছে ভারতীয় একটি ট্রলারে ১৪ জন জেলেসহ ৫৪ জন জেলে। ভরা মৌসুমে সাগরে মাছ না পাওয়ায় পাড়া মহল্লায় চলছে হাহাকার। সব জেলেরাই কমবেশী দাযদেনাগ্রস্ত। জেলেরা এক মৌসুমে মাছ ধরে বাকী বছর তাদের টরিবারপরিজনসহ সংসার পরিচালনা করে। বঙ্গোপসাগরেমাছ ধরে সারা বচর পরিবারপরিজনসহ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ও বৃদ্ধা পিতামাতার ভরনপোষণকরে আসছে। কিন্তু ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেরা না খেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করেছেন। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আষাঢ় মাস শেষ শ্রবণ মাস শুরু এখন জেলেদের মুখে হাসি নেই। তবে গত বছর এ মৌসুমে সরকার নিষেধাজ্ঞাজারিকরে মাছ ধরাবন্ধরেখেছিল। বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখলেও পার্শবর্তী ভারতের কিছু অসাধু জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানা অতিক্রম করে গভীর সমুদ্রে প্রবেশ করে ইলিশ সিকার করে নিয়ে যায়। এতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গতবছর এ সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড বাহিনীর যৌথ অভিযানে ৩৬৫ জন ভারতীয় জেলে বঙ্গপসাগর থেকে আটক করেপায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দীর্ঘদিন হেফাজতে রেখেছিলেন। পরে ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়েছে। গত বছরের এই দিনে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চরচান্দুপাড়া গ্রামের এফ বি হাসান ট্রলারে মাছ সিকারে গিয়ে ঘুর্নিঝড় বুলবুলের আঘাতে ৭ জেলে নিখোঁজ হয়। ১০ নভেম্বরের২০১৯ থেকে আজ অবধি ঐ ৭ জেলের হদিস মিলেনি। এসব জেলে পরিবারের সদস্যদের চোখের জল আজও শুকায়নি। নিখোঁজ হওয়া জেলেরা হলো, মোঃ বাবুল খানের পুত্র সেরাজুল খান, আলমাছ হাওলাদারের পুত্র মোঃ সুজন হাওলাদার, মোঃ জয়নাল আবেদীন খানের পুত্র মোঃ কাওসার খান, মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদারের পুএ মোঃ মুনসুর হাওলাদার, শাহআলম প্যাদার পুত্র মোঃনয়াপ্যাদা, মৃত নসু শরীফের পুত্র মোঃসোহেল শরীফ, ও আবদুল খালেক সরদারের পুত্র আলমাছ সরদার। নিখোঁজ হওয়া ৭জেলে পরিবারকে সরকারীভাবে একটি করে সেলাই মেশিন, একটি করে শীতবস্ত্র, জেলে চাল ব্যতিত তাদের পরিবারের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি।নিখোঁজ হওয়া জেলে পরিবারে অন্য কোন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় বর্তমানে তারা অর্ধাহারে আধা-পেটে না খেয়ে জীবন যাপন করছেন। তাদের সাহায্যে বিত্তবানদের আগাইয়া আসার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবী।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,ঘুর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি মানবতার দৃষ্টিতে আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারী কোন অনুদান পাওয়া গেলে তাদেরকে দেয়ার চেষ্টা আমার থাকবে।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!